অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশবিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন আসলে নোবেলজয়ী নন। মূলত এটা তার নিজের দাবি যে, তিনি নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিশ্বভারতীর জমি দখলের অভিযোগে অমর্ত্য সেনকে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্বভারতীর এস্টেট অফিসের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার জমি ফেরত দেওয়ার আবেদন করে অমর্ত্য সেনকে চিঠি পাঠান।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শতক জমি দখল করে রয়েছেন অমর্ত্য সেন। তিনি আদালতে যাচ্ছেন না, কারণ গেলেই হেরে যাবেন।
এ সময় অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার পাওয়া নিয়ে তোলা প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেন তিনি। তার ভাষ্যমতে, নোবেল প্রাইজের ডিটে বলা হয়েছে, পদার্থবিজ্ঞান, চিকিৎসা, সাহিত্য, রসায়ন ও বিশ্বশান্তি- এ পাঁচ বিষয়ে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়। তার বাইরে আর কোনো ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার পাওয়ার কথা নয়।
‘পরবর্তীকালে সুইডেনের সেন্ট্রাল ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থনীতিতে পুরস্কার চালু হয়। যার নাম ব্যাংক অব সুইডেন প্রাইস ইন ইকোনমিক সায়েন্স ইন মেমোরি অব আলফ্রেড নোবেল। সেটাকে নোবেল পুরস্কার বলা যায় না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কারে যেভাবে আলফ্রেড নোবেলের মুখ খোদাই করা আছে, অর্থনীতির ওই পুরস্কারে তেমনটা নেই।’
এদিকে, এর আগেও অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বছর দুয়েক আগেও একই অভিযোগ সামনে এনেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেসময় এ দাবি মিথ্যা বলে আইনী পদক্ষেপও নেন অমর্ত্য সেন। এমনকি, খোদ বোলপুরের অনেকেই বিশ্বভারতীর অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন।
পরবর্তী সময়ে অমর্ত্য সেন বলেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এ দাবি মিথ্যা। যে জায়গাটুকু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বলে দাবি করছেন, সেটা আমার পৈতৃক জায়গা। সেখানে একটা ঘর আছে, যেখানে আমার পিতামহ থাকতেন।
এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, চিঠি দিয়ে আমাকে রাজনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। যারা আমাকে পছন্দ করেন না, তারা কিছুদিন পরপর আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলেন।
এর আগে অমর্ত্য সেনের নাম উল্লেখ না করলেও, পরোক্ষভাবে তাকে ‘জমি চোর’ বলে কটাক্ষ করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সে সময় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন বোলপুরের অনেক স্থানীয় বাসিন্দা। এমনকি, অমর্ত্য সেনের পাশে রয়েছেন জানিয়ে একটি চিঠি দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০০৬ সালে অমর্ত্য সেন বাবার নামে থাকা লিজের জমি নিজের নামে রেকর্ড করার জন্য আবেদন করার পর বিষয়টি সবার সামনে আসে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে এ নিয়ে প্রায় চার দফা আলোচনার পরও সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি।
Leave a Reply